বড়াইগ্রাম প্রতিনিধি: দুয়ারে কড়া নাড়ছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। এজন্য নাটোরের বড়াইগ্রামে মণ্ডপে মণ্ডপে চলছে দুর্গাপূজার শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। ব্যস্ততায় যেন দম ফেলার ফুরসত নেই প্রতিমা শিল্পীদের। তাদের নিপুণ হাতে তৈরি হচ্ছে দুর্গা, গণেশ ও কার্তিকসহ বিভিন্ন দেব-দেবীর প্রতিমা।বড়াইগ্রাম উপজেলায় এ বছর ৫০টি মণ্ডপে উদযাপিত হবে দুর্গোৎসব।
জালোড়া সার্বজনীন দুর্গাপূজা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক শ্রী গোপাল চন্দ্র প্রামাণিক জানান, এবার দেবীদুর্গা আসবেন হাতিতে চড়ে, আর ফিরবেন নৌকায় চড়ে। ঢাক, ঢোল, শঙ্খধ্বনি আর উলুধ্বনি দিয়ে দেবীদুর্গাকে বরণ করে নেওয়ার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন তারা। প্রতিটি পূজা মণ্ডপে প্রতিমা বানানোর কাজ শেষ। এখন রঙ তুলির আঁচড়ে চলছে শেষ সময়ের প্রস্তুতি। ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত প্রতিমার কারিগররা ব্যস্ত সময় পার করছেন। নিখুঁতভাবে মনের মাধুরি মিশিয়ে তারা প্রতিমা তৈরির কাজ করছেন। আর প্রতিমা তৈরিতে মজুরি নিচ্ছেন ৫০ হাজার টাকা থেকে ১ লাখ টাকা। একইসঙ্গে পূজার পুরোহিত নির্বাচনের কাজও শেষ করছেন মণ্ডপ পরিচালনা কমিটি।বিভিন্ন পূজা মণ্ডপে সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, দুর্গার বাহকসহ প্রতিমার শাড়ি ও অলংকার পরানোর কাজও ইতোমধ্যেই শেষ হয়েছে। আলোকসজ্জা ও রঙিন কাগজ দিয়ে সাজান হচ্ছে প্রতিটি মণ্ডপ। প্রতিমা দেখতে এখনই দর্শনার্থীরা মণ্ডপে মণ্ডপে ঘুরে বেড়াচ্ছে।প্রতিমা তৈরির কারিগর রঞ্জিত নিয়োগি জানালেন, খড় আর কাঁদামাটি দিয়ে প্রতিমা তৈরির প্রাথমিক কাজ প্রায় শেষের দিকে। এখন রঙ আর তুলির আঁচড় দিয়ে দুর্গাকে সাজানো হবে বলে আয়োজক কমিটিরা জানান আগামী ১ অক্টোবর মহাষষ্ঠী এবং ৫ অক্টোবর বিজয়া দশমী বা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে সমাপ্ত হবে এবারের শারদীয় দুর্গাৎসব। এদিকে পূজা মণ্ডপগুলোর নিরাপত্তায় আনসার ও পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। উপজেলা প্রশাসন টহল দেবে বলে জানা গেছে।বড়াইগ্রাম উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি শ্রী গোপাল কুমার দাস জানান, পূজায় সর্বস্তরের মানুষের সমাগম ঘটবে। এটা যেমনি হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব। তেমনি এতে অন্য ধর্মের বিপুল সংখ্যক মানুষ অংশগ্রহণে আনন্দ উৎসবে পরিণত হয় তাই সবার কথা মাথায় রেখে সব ধরনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।তারা জানান, এ বছর উৎসবকে শান্তিপূর্ণভাবে করতে প্রশাসনের পাশাপাশি প্রতিটি মণ্ডপের নিজস্ব সেচ্ছাসেবক দায়িত্ব পালন করবে। এ ছাড়াও গুরুত্বপূর্ণ মন্দিরগুলোর তালিকা করে সেখানে বাড়তি নিরাপত্তার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। বড়াইগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি আবু সিদ্দিক বলেন, বড়াইগ্রাম উপজেলায় দুর্গাপূজার মণ্ডপগুলোতে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা জোরদার করা হবে। এছাড়াও মণ্ডপগুলোতে বাড়তি নজরদারি ও গোয়েন্দা তৎপরতাও থাকবে। এ বিষয়ে বড়াইগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছাঃ মারিয়াম খাতুন বলেন, এবারের দুর্গাপূজায় কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে দুর্গাৎসব পালন করা হবে।