প্রতিনিধি, রাজশাহী॥
অবৈধ তদবীর বাস্তবায়ন না করতে পেরে মিথ্যা ও উদ্দেশ্য প্রনোদিতভাবে সংবাদ প্রকাশ করায় রাজশাহী শিক্ষা বোর্ড থেকে সাইদুর রহমান নামে এক সাংবাদিকের বিরুদ্ধে উকিল নোটিশ করা হয়েছে। তিনি ঢাকা থেকে প্রকাশিত দৈনিক ভোরের কাগজ পত্রিকার রাজশাহী প্রতিনিধি। সম্প্রতি তিনি ওই পত্রিকার অনলাইন পোর্টালে উদ্দেশ্য প্রনোদিতভাবে ‘রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডে বিদ্যালয় পরিদর্শকের কাছে জিম্মি শিক্ষকরা’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশ করেন। এর প্রেক্ষিতে তাকে ওই উকল নোটিশ দেয়া হয়।
রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের বিদ্যালয় পরিদর্শক মহা. জিয়াউল হক এর পক্ষে রাজশাহী জজ কোর্টের এ্যাডভোকেট মোহা. এজাজুল হক মানু ওই নোটিশটি পাঠান। নোটিশ প্রাপ্তির ১৫ দিনের মধ্যে জবাব না দিলে পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ নেবেন বলে জানান আইনজীবী।
শিক্ষা বোর্ড সূত্রে জানা যায়, অভিযুক্ত সাংবাদিক সাইদুর রহমান রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডে সংবাদ সংগ্রহের নামে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অবৈধ কমিটি পাস করানোর তদবির করে থাকেন। তার কথামত কাজ না করলে নানা ভাবে চাপ প্রয়োগ করেন। এতে কাজ না হলে উদ্দেশ্যমূল সংবাদ প্রকাশ করে হেনস্থা করেন। তারই ধারাবাহিকতায় বিদ্যালয় পরিদর্শক মহা. জিয়াউল হককে বাগে আনতে তিনি উদ্দেশ্য মূলক ভাবে মনগড়া তথ্য দিয়ে বানোয়াট সংবাদ প্রকাশ করেছেন। ওই প্রতিবেদনকে মিথ্যা ও বানোয়াট হিসেবে দাবি করে সাংবাদিক সাইদুর রহমানের বিরুদ্ধে উকিল নোটিশ পাঠিনো হয়েছে।
সম্প্রতি সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের আওতায় থাকা আট জেলার প্রায় ৪ হাজার ৫০০ বিদ্যালয়ে কাজের গতি ফিরেছে। অন্তত ২ হাজারের বেশি ফাইল জমে স্বাভাবিক গতি হারিয়েছিলো। বর্তমান বিদ্যালয় পরিদর্শক মুহা. জিয়াউল হক নিরলসভাবে কাজের মাধ্যমে কাজের গতি এসেছে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। শিক্ষা বোর্ডের বিদ্যালয় শাখা সূত্রে আরও জানা যায়, ২০২২ খ্রিষ্টাব্দের এপ্রিল মাসে বিদ্যালয় পরিদর্শক হিসেবে প্রেষণে নিয়োগ পান বিসিএস-২৬ ব্যাচের শিক্ষা ক্যাডারের সহকারী অধ্যাপক মহা. জিয়াউল হক। এরপরেই গত এপ্রিল-২০২২ থেকে এপ্রিল-২০২৪ পর্যন্ত দুই বছরে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি অনুমোদন দেয়া হয়েছে ৩ হাজার ২২৪টি, অ্যাডহক কমিটি অনুমোদন দেয়া হয়েছে ২ হাজার ৬৯৪টি, মুঞ্জুরি নবায়ন করা হয়েছে ২ হাজার ১০টি। শাখার কাজ নিয়ে যখন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্টরা সন্তুষ্টি প্রকাশ করতে শুরু করেছেন তখনই এধরনে সংবাদে ওই গতিকে বাধাগ্রস্থ করতে যাচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সাংবাদিক সাইদুর রহমান শুধু শিক্ষা বোর্ড নয়, তিনি অধিকাংশ সরকারি দপ্তরে তদবীর বানিজ্য করে থাকেন। তাকে ঘিরে এমন হাজারো গল্প আছে রাজশাহীর মানুষের মুখে মুখে।
বিদ্যালয় পরিবর্শক মহা. জিয়াউল হক দৈনিক শিক্ষাকে বলেন বলেন, আমি দায়ীত্ব নেওয়ার পর থেকেই সাংবাদিক সাইদুর রহমান বিভিন্ন স্কুলের ম্যানেজিং কমিটি পাস করানো জন্য তদবীর করে থাকেন। যেগুলো বিধি মোতাবেক থাকে সেগুলো করে দিলে বিধি বর্হিভুত গুলো করা সম্ভব হয় না। আর স্কুল গুলোতে নিয়োগ বানিজ্য করতে ইচ্ছেমত কমিটি করার একটা প্রবনা বরাবরই থাকে। বাধা গ্রস্থ হলেই আমার নামে অপপ্রচার শুরু করে। তার প্রমান সাংবাদিক সাইদুরের ওই সংবাদ।
শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. অলীউল আলমের নিকট মোবাইল ফোনে বিদ্যালয় পরিদর্শক মহা. জিয়াউল হক সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার নিকট তার নামে এখন পর্যন্ত কোন অভিযোগ আসেনি। বিদ্যালয় শাখার কাজও স্বাভাবিক রয়েছে।**