প্রান্তজন রিপোর্ট: শিক্ষিকা খায়রুন নাহারের (৪০) মৃত্যুর ঘটনায় তার স্বামী মামুন হোসেনকে আদালতে প্রেরণ করা হচ্ছে। জিজ্ঞাসাবাদে মামুনের কাছ থেকে সন্তোষজনক তথ্য না পাওয়ায় সন্দেহভাজন হিসেবে আজ মঙ্গলবার দুপুরে তাকে আদালতে প্রেরণ করা হবে। এদিকে রোববার রাসায়নিক পরীক্ষার জন্য খায়রুন নাহারের শরীর থেকে নমুনা সংগ্রহের পর সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে গুরুদাসপুর পৌর সদরের খামারনাচকৈড় কবরস্থানে দাফন করা হয়।
নাটোর সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নাসিম উদ্দিন মঙ্গলবার বেলা ১১টায় বলেন, শিক্ষিকা খায়রুন নাহারের মৃত্যুর বিষয়ে নাটোর সদরের বলারিপাড়ার নান্নু মোল্লা ম্যানশনের মালিক এবং প্রহরী নিজাম উদ্দিনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তাছাড়া ওই ফ্ল্যাটের সিসিপিভি ফুটেজও পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।
ওসি বলেন, নিহত শিক্ষিকার স্বামী মামুন হোসেনকে সোমবার সকালেই আটক করা হয়। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। কিন্তু তার কাছ থেকে সন্তোষজনক তথ্য পাওয়া যায়নি। একারণে মামুনকে আজ মঙ্গলবার দুপুরে সন্দেহভাজন হিসেবে ফিফটি ফোর-এ আদালতে প্রেরণ করা হবে। তবে এটি হত্যা নাকি আত্মহত্যা তা এখনো উদঘাটন হয়নি। মৃত্যুর রহস্য উদঘাটনে পুলিশ প্রযুক্তিগতভাবে তদন্ত করছে।
মায়ের মৃত্যু নিয়ে খায়রুন নাহারের বড় ছেলে সালমান বিন্ত মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে ইত্তেফাককে বলেন, দ্বিতীয় বিয়ের পর থেকে মায়ের সাথে যোগাযোগ বন্ধ ছিল। গত ১২ আগস্ট আবারও যোগাযোগ শুরু হয়। ওই দিন মা খায়রুন নাহার তাকে জানানÑমামুনকে চার মাসের মধ্যে দুইটি মোটরসাইলকেল কিনে দিয়েছেন। সবশেষ ৮দিন আগে ১লাখ ৮৮ হাজার টাকা মূল্যের একটি পালসার সিঙ্গেল মডেলের মোটরসাইকেল কিনে দিয়েছেন।
তিনি বলেন, মা খায়রুন নাহারকে টাকার জন্য শারিরিক এবং মানসিকভাবে নির্যাতন চালাতেন মামুন। হত্যা বা আত্মহত্যা যাই হোকÑতার জন্য দায়ি মায়ের দ্বিতীয় স্বামী মামুন হোসেন। তিনি মামুনের বিচার দাবি করেন।
প্রসঙ্গতÑ ছাত্রকে বিয়ে করা খায়রুন নাহার (৪০) নামের ওই শিক্ষিকার লাশ ভাড়া বাড়ি থেকে গতকাল রোববার বেলা ১১টার দিকে উদ্ধার করে পুলিশ। এঘটনায় স্বামী মামুন হোসেনকে নিরাপত্তাজনিত কারণে নাটোর সদর থানা হেফাজতে নেয় পুলিশ।
এদিকে দীর্ঘ প্রেমের পর শিক্ষিকা-ছাত্রের বিয়ের বিষয়টি এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। সম্প্রতি বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। বিয়ের বিষয়টি আলোচনার পাশাপাশি ব্যপক সমালোচনার জন্ম দেয়। একারণে ওই শিক্ষিকা তার দ্বিতীয় স্বামী মামুনের সাথে নাটোর সদরের একটি বাড়িতে ভাড়া থাকতে শুরু করেন।
নিহত শিক্ষিকা খায়রুন নাহার গুরুদাসপুর পৌর সদরের খামারনাচকৈড় মহল্লার খয়বর আলীর মেয়ে। তিনি খুবজিপুর এমহক কলেজের সহকারি অধ্যাপিকা ছিলেন। স্বামী মামুন হোসেন উপজেলার ধারাবারিষা ইউনিয়নের পলশুড়া-পাটপাড়া গ্রামের মোহাম্মদ আলীর ছেলে। তিনি নাটোর এনএস কলেজের ডিগ্রী দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র।






