প্রান্তজন রিপোর্ট: টেকসই দুগ্ধশিল্প গড়ার প্রত্যয়ে নাটোরে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল বিশ্ব দুগ্ধ দিবস। দিবসটি উপলক্ষে বুধবার বেলা ১১টায় স্থানীয় অনিমা চৌধুরী অডিটোরিয়ামে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। নাটোর-২ আসনের সংসদ সদস্য মোঃ শফিকুল ইসলাম শিমুল অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন নাটোর জেলা পরিষদের প্রশাসক এডভোকেট সাজেদুর রহমান খান, জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ গোলাম মোস্তফা, নাটোর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ মহসীন প্রমুখ। আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, নাটোরে দুধের শ্বেত বিপ্লব ঘটেছে। প্রাণিসম্পদ বিভাগের প্রশিক্ষণ ও উন্নয়নমূলক বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করার ফলে জেলায় দুধের উৎপাদন ক্রমান্বয়ে বেড়েছে। বর্তমানে জেলায় প্রায় ২৩ হাজার টন উদ্বৃত্ত দুধ উৎপাদন হচ্ছে। এই অবস্থানকে টেকসই করতে কার্যকর সকল পদক্ষেপ গ্রহন করা হবে। মেধাবী জাতি গঠনে প্রতিদিন এক গ্লাস করে দুধ পানের পরামর্শ দেন বক্তারা। আলোচনা সভার আগে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা শহর প্রদক্ষিণ করে। দিবসটি উপলক্ষে শিক্ষার্থীদের জন্যে আয়োজিত চিত্রাংকণ, রচনা ও কুইজ প্রতিযোগীতায় বিজয়ীদের মাঝে পুরষ্কার ও সনদ বিতরণ করা হয়। এছাড়া পাঁচটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের জন্যে দুধ পানের আয়োজন করা হয়।
জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগ জানিয়েছে, ২০০৮-০৯ অর্থ বছরে জেলায় মাত্র ৬০ হাজার টন দুধ উৎপাদন হয়। বিগত ১২ বছর ধরে দুধের উৎপাদন ক্রমশ বেড়েছে। চলতি অর্থ বছরে জেলায় প্রায় দুই লাখ টন দুধ উৎপাদন হয়েছে। প্রতিদিন জনপ্রতি দুধ গ্রহণের আদর্শমান আড়াইশ’ মিলিলিটার। জেলার মোট জনসংখ্যা ১৮ লক্ষ ২৬ হাজার ১৪০ ব্যক্তির বাৎসরিক দুধের চাহিদা প্রায় পৌনে দুই টন। অর্থাৎ চাহিদা মিটিয়ে নাটোরে উদ্বৃত্ত থাকছে ২৩ টন দুধ। প্রাণিসম্পদ বিভাগ দুগ্ধ খামারীদের নিয়মিত প্রশিক্ষণ দিয়ে যাচ্ছে এবং নতুন নতুন প্রযুক্তি সরবরাহ করছে। মিল্কভিটার দুগ্ধ শীতলীকরণ কেন্দ্র, প্রাণসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের ক্রয়কেন্দ্র স্থাপনের ফলে জেলায় খামারের সংখ্যাও বেড়েছে। করোনাকালীন সময়ে খামারীদের প্রণোদনার অর্থও দেওয়া হয়েছে। সরকারের এসব উদ্যোগের সুফল হিসেবে নাটোর দুধ উদ্বৃত্ত জেলায় পরিণত হয়েছে।