বাঘা প্রতিনিধি: রাজশাহীর বাঘা উপজেলায় নাজমুল হোসেন হত্যা মামলায় ছয়জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাদের ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এছাড়া একই সময় দোষ প্রমাণ না হওয়ায় এ মামলা থেকে আরোও ১৫ আসামিকে খালাস দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজশাহীর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক অনুপ কুমার এই রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার সময় আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন। সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- মো.মিন্টু আলী, মো. রানা, মো. পানা, মো. আরিফ হোসেন, মো. শরীফ হোসেন ও আরজেল আলী ওরফে ভোলা। দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল আদালতের স্পেশাল পিপি আইনজীবী এনতাজুল হক বাবু বলেন, এ মামলার আসামি ২৫ জন। তবে তাদের মধ্যে চার জন শিশু। সম্পূরক অভিযোগপত্র দিয়ে ওই চার জনকে শিশু আদালতে বিচারের জন্য পাঠানো হয়, যা বিচারাধীন রয়েছে। বাকি ২১ জনের বিচার হয়েছে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে। এদের মধ্যে ছয় জনকে যাবজ্জীবন ও ১৫ জনকে খালাস দিয়েছেন আদালত। এলাকাবাসী ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি আরজেদ আলীর ছেলে সুমন এলাকার নবম শ্রেণি পড়ুয়া এক স্কুলছাত্রীকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে উত্যক্ত করত। ২০১৯ সালের শেষের দিকে সুমন সেনা সদস্য হিসেবে নিয়োগ পেলে আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। এবং যে কোন মূল্যে সে ওই ছাত্রীকে বিয়ে করবে বলে ঘোষণা দেয়। সেনাবাহিনীর চাকরিতে প্রশিক্ষণে যাওয়ার আগে ২০২০ সালের ১৪ জানুয়ারি সে তার বন্ধুদের নিয়ে ওই ছাত্রীর পথ আটকে আবার প্রেমের প্রস্তাব দেয়। ওই ছাত্রী বাড়িতে গিয়ে বিষয়টি জানায়। তখন ছাত্রীর নানা আজিজুর রহমান সুমনের বাবা-মায়ের কাছে বিচার দেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে সুমন। সেদিন বিকালে পার্শ্ববর্তী বাঘা উপজেলার সুলতানপুর মোড়ে আজিজুলের ছেলে নাজমুল হোসেন ও আজিজুলের নাতি তারিকুল ইসলাম তুষারকে একা পেয়ে জনসম্মুখে কুপিয়ে ও পিটিয়ে আহত করে সুমনসহ অন্য আসামিরা। পরে নাজমুলকে উদ্ধার করে বাঘা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এ নিয়ে বাঘা থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন নিহতের বাবা আজিজুল। এবং এ ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার তদন্ত শেষে পুলিশ ২৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে। বিচার শেষে মিন্টু, রানা, পানা, আরিফ, শরীফ ও ভোলার বিরুদ্ধে অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় তাদেরকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। রায়ে প্রত্যেক আসামিকে ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। অনাদায়ে আরও এক বছর করে বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল। এ সময় সাজাপ্রাপ্ত আসামিদেরকে আদালত থেকে কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।






