রাজশাহী প্রতিনিধি: রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনে ওয়াসার পানির দাম তিন গুণ বেশি বাড়ানো হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার (১ ফেব্রুয়ারি) থেকে আবাসিক ও বাণিজ্যিক উভয় ক্ষেত্রেই পানির নতুন মূল্য কার্যকর করা হয়। এ নিয়ে নগরবাসীর মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিলেও কর্তৃপক্ষ বলছেন, পানির দাম বাড়ানোর পরও এটি দেশের অন্য শহরের চেয়ে এ শহরে অনেক কম। এর আগে চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে শুরুতে মহানগরীতে আগের মূল্যের পানির দাম তিন গুণ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয় রাজশাহী পানি সরবরাহ ও পয়োনিষ্কাশন কর্তৃপক্ষ (ওয়াসা)। এ নিয়ে প্রতিষ্ঠানটির ওয়েবসাইটের পাশাপাশি পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দিয়ে বিষয়টি প্রচার করেছিলন। রাজশাহী ওয়াসার ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ১ ফেব্রুয়ারি থেকে প্রতি ১ হাজার লিটার পানির মূল্য আবাসিকে ৬ দশমিক ৮১ এবং বাণিজ্যিকে ১৩ দশমিক ৬২ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে পাইপের ব্যাস ও ভবনের তলার ভিত্তিতেও নতুন মূল্য নির্ধারণের তালিকা প্রকাশ করা হয়। এর আগে রাজশাহীতে আবাসিক সংযোগে প্রতি ১ হাজার লিটার পানির দাম ধরা হতো ২ টাকা ২৭ পয়সা। এছাড়া বাণিজ্যিকে ছিল ৪ টাকা ৫৪ পয়সা। মূল্যবৃদ্ধির সিদ্ধান্তের বিষয়ে রাজশাহী রক্ষা সংক্রম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক জামাত খান বলেন, ওয়াসার পানি সব সময় ঠিকমতো পাওয়া যায় না। ফলে এই করোনাকালিন পরিস্থিতিতে পানির দাম না বাড়ানোর দাবি জানান তিনি। জানতে চাইলে রাজশাহীর ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাকির হোসেন বলেন, পয়লা ফেব্রুয়ারি থেকে ওয়াসার পানির নতুন মূল্য কার্যকর করা হয়েছে। সময়ের সাথে সাথে সবকিছুরই দাম বাড়ছে। তাই সময় ও উৎপাদন খরচের সাথে সঙ্গতি রেখেই পানির নতুন মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠার পর বর্তমান ওয়াসার পরিধি অনেক বেড়েছে। কিন্তু পানির দাম সেই তুলনায় বাড়েনি। অথচ এই পানির বিলই ওয়াসার আয়ের উৎস। এজন্য গ্রাহক ও প্রতিষ্ঠানের সব দিক বিবেচনায় রেখে পানির দাম বাড়ানো হয়েছে। তিনি আরও বলেন, রাজশাহী সিটি করপোরেশনের (রাসিক) পানি সরবরাহ শাখাকে আলাদা করে ২০১০ সালের ১ আগস্ট প্রতিষ্ঠা হয় রাজশাহী ওয়াসা। এরপর ২০১১ সালের ১০ মার্চ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে ওয়াসার কার্যক্রম চালু হয়। তখন মহানগরীর ৩০ ওয়ার্ডের ১০৪ বর্গ কিলোমিটার এলাকায় ৫৬টি গভীর নলকূপের মাধ্যমে পানি সরবরাহ করেছিল ওয়াসা। বর্তমানে ওয়াসা জনসংখ্যা ভিত্তিক পানির প্রাপ্যতা (কাভারেজ) ৫২ শতাংশ থেকে ৮৪ শতাংশে উন্নীত করেছে। পানির কাভারেজ বাড়াতে পানি উৎপাদক নলকূপের সংখ্যা ৫৬টি থেকে ১১০টি করা হয়েছে। সঙ্গে পানির পাইপ লাইন ৫৫০ কিলোমিটার থেকে ৭১২ কিলোমিটারে উন্নীত করা হয়েছে। বর্তমানে রাজশাহী ওয়াসা প্রতিষ্ঠানটি দৈনিক ১৩ দশমিক ৫ কোটি লিটার পানির চাহিদার বিপরীতে দৈনিক ৯ দশমিক ৯ কোটি লিটার পানি উৎপাদন করছে। উৎপাদিত পানির ৯০ শতাংশ ভূ-গর্ভস্থ পানি।