এক একটা গাছ এক একটা অক্সিজেন ফ্যাক্টরি। আমরা মানুষ আমাদের বেঁচে থাকার জন্য এই পৃথিবীতে যে জিনিসটি সবচাইতে মহামূল্যবান তা হলো অক্সিজেন। অক্সিজেন ছাড়া মানুষ এক মুহূর্তের জন্যেও বাঁচতে পারবে না। আর সেই মহামূল্যবান অক্সিজেন আমরা গাছ থেকে পাই। গাছ প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষা করে, গাছ বাঁচলে প্রকৃতি ও মানুষ বাঁচবে। অথচ আমরা এই উপকারী বন্ধুর কথা বেমালুম ভুলে যাই। নিঃশ্বার্থভাবে যেই গাছ আমাদের প্রতি মুহূর্তে উপকার করে যাচ্ছে, আর আমরা কিনা কারণে অকারণে সেই গাছ কেটে ফেলছি। উজার হয়ে যাচ্ছে বন, রুক্ষ হচ্ছে প্রকৃতি, আবহাওয়ার বিরূপ প্রভাব পড়ছে আমাদের প্রকৃতিতে। তাপমাত্রা বেড়ে যাচ্ছে, তাপদাহে পুড়ছে প্রকৃতি পুড়ছে মানুষ। আমরা যদি আমাদের পরম প্রিয় বন্ধু গাছের প্রতি যত্নবান হতাম, কিংবা প্রয়োজনে গাছ কাটার পরে আরও বেশি করে গাছ লাগাতাম, তাহলে আমাদের প্রকৃতি থাকতো প্রাণবন্ত তাপমাত্রা থাকতো সহনীয়। আমরা বুকভরা শ্বাস নিতাম অক্সিজেন ফ্যাক্টরির ভেতর। এখনই সময় আমাদের প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষা করার, এখনই সময় প্রচুর গাছ লাগানোর, এখনই সময় আমাদের চারপাশে সবুজে সবুজে ভরে তোলার। আমরা নাটোরের মানুষ আমরা চাইলেই আমাদের পাশের জেলা শহর রাজশাহীকে অনুসরণ করতে পারি। রাজশাহী শহর সবুজের শহর, শহরের রাস্তার চারপাশে বড়রাস্তার আইল্যান্ড জুড়ে শুধু গাছ গাছ আর গাছ। রাজশাহী শহরকে সারা পৃথিবীর মধ্যে দূষণমুক্ত শহর হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। আমাদের পাশের জেলা শহর রাজশাহী যদি দূষণমুক্ত শহর হিসেবে ঘোষণা হতে পারে, তাহলে আমরা নাটোরের মানুষ কেন পারবো না আমাদের শহরকে সবুজে সবুজে ভরে তুলতে? একটু চেষ্টা করলে আমরাও পারবো। আমরা আমাদের নিজেদের বাড়িতে, বাড়ির ছাদে, কিংবা আঙ্গিনায়, আশেপাশে, রাস্তার দুই ধারে, বড়রাস্তার আইল্যান্ড এ গাছ লাগাতে পারি। সবুজে সবুজে ভরিয়ে তুলতে পারি আমাদের নাটোর। মনে রাখতে হবে, আমরা আমাদের নিজেদের স্বার্থে, আমাদের আগামী প্রজন্ম যাতে সবুজের মাঝে বেড়ে উঠতে পারে সেই জন্য গাছ লাগাবো। সবুজের বিপ্লব ঘটে যাবে আমাদের নাটোরে। একদিন আমরাও পৃথিবীর বুকে দূষণমুক্ত শহর হিসেবে জায়গা করে নিতে পারবো। এভাবেই একদিন এক একটা শহর, এক একটা দেশ সবুজে সবুজে ভরে যাবে, পৃথিবী ফিরে পাবে চিরচেনা রূপ।