প্রেস বিজ্ঞপ্তি: বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল বাসদ, নাটোর জেলার সদস্য মোবারক হোসেন স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে- গত ২২ জুন ঢাবির মেধাবী শিক্ষার্থী সুমাইয়া বেগমকে তার শ্বশুড়বাড়ির লোকেরা পড়াশোনা শেষে চাকরি করতে বাধা দিয়ে নির্মম নির্যাতন চালায়, নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে সুমাইয়া মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়ে। তার স্বামী এবং শ্বশুড় সুমাইয়ার লাশ হাসপাতালের মর্গে রেখে পালিয়ে যায়। ইতিপূর্বে সুমাইয়ার বিয়ের সময় তার শ্বশুড়বাড়ির লোকেরা প্রতারণামূলকভাবে ছেলে বুয়েট পাশ করা প্রকৌশলী বলে মিথ্যার আশ্রয় নেয়। একজন নারী এই সমাজে নিজের পরিচয়ে বাঁচার অধিকার আছে। তার মেধাকে কাজে লাগিয়ে জীবীকার্জন তথা দেশের কাজে ব্যবহার করা তার অধিকার। সুমাইয়া দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মাস্টার্সের ফল প্রত্যাশী। সে চাকরী করে অর্থ উপার্জনের চেষ্টা করতে চেয়েছিল, চেয়েছিল নিজের পায়ে দাঁড়াতে। কিন্তু আধুনিক যুগেও তার শ্বশুড়বাড়ির লোকেরা মধ্যযুগীয় চিন্তাই শুধু করেনি বর্বরতারও প্রকাশ ঘটিয়েছে। ঘটনা দৃষ্টে স্বামীর অর্থ উপার্জনের অক্ষমতা আর নারীদের বাইরে কাজ করতে যাওয়া উচিত নয় এই মৌলবাদী চিন্তার কারণে নির্যাতনে হত্যাকা- বলেই প্রতীয়মান হয়। পুলিশ বলছে তারা নিশ্চিত নয় হত্যা না আত্মহত্যা। যদি তদন্তে প্রমাণও হয় যে আত্মহত্যা তবুও আমরা মনে করি আত্মহত্যার প্ররোচনা দেয়ার জন্য তার শ্বশুড়বাড়ির লোকেরা দায়ী। তাদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার করতে হবে।
আমরা লক্ষ্য করছি নারীর সমান অধিকার সরকারী ঘোষণা প্রতিনিয়ত প্রচার করা হলেও। নারীর উপর সহিংসতার ঘটনা প্রতিদিন বেড়েই চলেছে। সমাজে পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতার শিকার থেকে শিশু, নারী এমনকি বৃদ্ধারও নিস্তার নেই। দেশে এসব নির্যাতনকারী, ধর্ষকদের বিচারহীনতার সংস্কৃতিই সহিংসতার মাত্রা বাড়িয়ে দিচ্ছে। একদিকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং আধুনিক শিক্ষার বিস্তার সহিংসতা থেকে নারীদের রক্ষা করতে পারে। কিন্তু সরকার কোন কোন বিশেষ ঘটনায় সমাজে প্রতিবাদ তৈরি হলে তৎপতা দেখায় সাময়িক সময়ের জন্য। বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল বাসদ নাটোর জেলা সমন্বয়ক দেবাশীষ রায় সুমাইয়া বেগম এর হত্যাকা-ের সুষ্ঠু তদন্ত ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন। পাশাপাশি সুমাইয়া সহ দেশে অব্যাহত নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে সকল মানুষ সামাজিক প্রতিরোধ আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানান।